জুলাই বিপ্লবের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক বছরেরও বেশি সময় পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মৌলিক স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং আইন সংস্কারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারের এই উদ্যোগের প্রশংসা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি যৌথভাবে খোলাচিঠি দিয়েছে ৬টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত
জুলাই বিপ্লবের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক বছরেরও বেশি সময় পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মৌলিক স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং আইন সংস্কারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারের এই উদ্যোগের প্রশংসা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি যৌথভাবে খোলাচিঠি দিয়েছে ৬টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই চিঠিতে সরকার যেন মানবাধিকার সুরক্ষা আরও বিস্তৃত করতে পারে এবং ভবিষ্যতে পুনরায় কর্তৃত্ববাদী শাসনের ঝুঁকি প্রতিহত করতে পারে, সেজন্য ১২টি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।
চিঠির শুরুতে সংস্থাগুলো সরকারের প্রশংসা করে এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সময় বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করার জন্য ড. ইউনূসের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
১২ দফার মূল সুপারিশ
চিঠিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, নিরাপত্তা খাতে এখনো কাঠামোগতভাবে সংস্কার হয়নি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্য এখনো জবাবদিহিতা প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছে না। তাই ২০২৩ সালের নির্বাচনের আগে এবং জুলাই বিপ্লবের সময় সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচারের উদ্যোগ নিতে হবে। একইসাথে, চলমান নির্বিচার গ্রেপ্তার ও আটক, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলাগুলো অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়।
সংস্থাগুলোর সুপারিশগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
- জবাবদিহিতা ও বিচার: জুলাই বিপ্লব ও বিগত পনেরো বছরে সংঘটিত গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা। সেনাবাহিনীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)-কে পূর্ণ সহযোগিতা দেওয়া এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে সাময়িক স্থগিতাদেশ ঘোষণা করা।
- নিরাপত্তা খাতে সংস্কার: র্যাব বিলুপ্ত করা এবং সেনা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিজিএফআই)-এর ক্ষমতা সীমিত করে সামরিক গোয়েন্দা কার্যক্রমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা।
- আইন সংস্কার: আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ‘গুমকে’ অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করে ‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার অধ্যাদেশ’ পাস করা। সাইবার সিকিউরিটি আইন, সন্ত্রাসবিরোধী আইন ও ফৌজদারি আইনে মানহানির ধারা বাতিল বা সংশোধন করা।
- রাজনৈতিক স্বাধীনতা: সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে যে সামগ্রিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা।
- সাংবাদিক ও সিভিল সোসাইটির স্বাধীনতা: সাংবাদিকদের হয়রানি থেকে রক্ষা এবং এনজিও বিষয়ক ব্যুরো সংস্কার করে নাগরিক সংগঠনগুলোর স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
- রোহিঙ্গা শরণার্থী সুরক্ষা: রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো বন্ধ করা এবং ক্যাম্পে তাদের চলাচল, জীবিকা ও শিক্ষার ওপর আরোপিত সীমাবদ্ধতা কমানো।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারী সংস্থাগুলো হলো: সিভিকাস, কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস, ফর্টিফাই রাইটস, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, রবার্চ এফ. কেনেডি হিউম্যান রাইটস এবং টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট।
Channel July 36 








Leave a Comment
Your email address will not be published. Required fields are marked with *