ইরাকে আগামী ১১ নভেম্বর পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। দেশটির প্রভাবশালী শিয়া নেতা মোকতাদা আল-সদর গত মাসে এক বিবৃতিতে ঘোষণা দেন যে, তাঁর দল সদরিস্ট মুভমেন্ট এই নির্বাচন বর্জন করবে। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে তিনি ইরাকের রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কার এবং দেশটিকে রক্ষার ইঙ্গিত দিয়েছেন। ২০২২ সালের জুনে আল-সদর তাঁর জোটের আইনপ্রণেতাদের পার্লামেন্ট থেকে প্রত্যাহার করে
ইরাকে আগামী ১১ নভেম্বর পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। দেশটির প্রভাবশালী শিয়া নেতা মোকতাদা আল-সদর গত মাসে এক বিবৃতিতে ঘোষণা দেন যে, তাঁর দল সদরিস্ট মুভমেন্ট এই নির্বাচন বর্জন করবে। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে তিনি ইরাকের রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কার এবং দেশটিকে রক্ষার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
২০২২ সালের জুনে আল-সদর তাঁর জোটের আইনপ্রণেতাদের পার্লামেন্ট থেকে প্রত্যাহার করে নেন। এরপর থেকেই ইরাকে ক্ষমতার পালাবদল তাঁর প্রধান লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে।
প্রতিদ্বন্দ্বী এসসিএফ-এর সমালোচনা
মোকতাদা আল-সদরের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হলো শিয়া কো-অর্ডিনেশন ফ্রেমওয়ার্ক (SCF)। এটি ইরান-সমর্থিত দলগুলোর সমন্বয়ে গঠিত জোট। সদরিস্ট মুভমেন্টের আইনপ্রণেতারা সরে আসার পর এসসিএফ ইরাকে শিয়াদের সবচেয়ে বড় জোটে পরিণত হয়েছে। আল-সদর তাঁর বিবৃতিতে এই জোটের কঠোর সমালোচনা করেন এবং অভিযোগ করেন যে এসসিএফ তাঁর মিত্রদের ওপর রকেট হামলা চালিয়েছে।
আল-সদরের বিবৃতিতে বলা হয়, তিনি ইরাকে পুরো রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কার ছাড়া আর কিছুই চান না।
রাজনীতি থেকে সরে আসা নয়, কৌশল
আল-সদরের জোটের আইনপ্রণেতাদের পার্লামেন্ট থেকে প্রত্যাহারের ঘটনাকে রাজনীতি থেকে পুরোপুরি সরে আসা হিসেবে দেখা হচ্ছে না, বরং এটি পুরোদমে শক্তি সঞ্চয় করে রাজনীতির মাঠে ফিরে আসার একটি কৌশল বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
জানা গেছে, আল-সদর নিজের শর্তে জাতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন করতে চান এবং এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য সময় নিচ্ছেন। তাঁর দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হলো বর্তমান সরকারের পতনের অপেক্ষায় থেকে সদরিস্ট মুভমেন্টকে আরও সংগঠিত করা। সরকার পতনের পরপরই কোনো জোট না করেই যাতে ক্ষমতায় আসা যায়, সেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।
আল-সদরের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, প্রথমে দলের একাংশ নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলেও, শিয়া কো-অর্ডিনেশন ফ্রেমওয়ার্ক (এসসিএফ) সময়সীমা বৃদ্ধির অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করায় শেষ পর্যন্ত আল-সদর নিজেই জুলাই মাসে আলোচনার পথ বন্ধ করে দেন এবং চূড়ান্তভাবে নির্বাচন বর্জনের ডাক দেন।
‘মুহাসাসা’ ব্যবস্থার প্রভাব
আল-সদর মূলত ইরাকের ২০০৬ সাল থেকে প্রচলিত ক্ষমতা-বণ্টন চুক্তি ‘মুহাসাসা’-এর কারণে জোট সরকার গঠনে ব্যর্থ হন। এই ব্যবস্থায় সরকারের মন্ত্রিসভা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ জাতিগত ও সাম্প্রদায়িক অনুপাতে বণ্টন করা হয়, যার কারণে পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব থাকা সব দলই সরকারের অংশ হয়ে যায়। সমালোচকেরা মনে করেন, এই ব্যবস্থা জবাবদিহির সংস্কৃতিকে দুর্বল করে দেয়।
২০২১ সালে সদরিস্ট মুভমেন্ট নির্বাচনে সর্বোচ্চ ৭৩টি আসনে জয়ী হলেও জোট সরকার গঠনে ব্যর্থ হওয়ায় আল-সদর পার্লামেন্ট থেকে সরে আসেন। তখন এসসিএফ জোটের নেতারাই দ্বিতীয় হওয়া প্রার্থী হিসেবে আসনগুলোতে জায়গা করে নেন এবং পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেন।
Channel July 36 







Leave a Comment
Your email address will not be published. Required fields are marked with *