২০২৫ সালের ২৩ নভেম্বর, রবিবার দুপুরের দিকে গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল থানাধীন কুদাব পশ্চিম পাড়ায় আব্দুর রহমানের মালিকানাধীন তুলার গুদামে হঠাৎ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং ঘন ধোঁয়া ও তীব্র আগুনের কারণে কেউ প্রথমে গুদামে প্রবেশ করতে সাহস পায়নি। খবর পেয়ে পূবাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোল্লা মো. খালিদ হোসেন দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং নিজের নিরাপত্তার তোয়াক্কা না করে জ্বলন্ত গুদামে ঝাঁপ দিয়ে তুলার ভারী বস্তা মাথায় নিয়ে মালামাল উদ্ধার শুরু করেন, যা তার অসাধারণ সাহস প্রদর্শন করে এবং ভয়ার্ত দর্শকদের উদ্বুদ্ধ করে উদ্ধারকাজে যোগ দিতে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওসির এই নেতৃত্ব ছাড়া গুদামের ক্ষতি অনেক বেশি হতো; সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল নিরাপদে সরানো সম্ভব হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ধ্বংস থেকে রক্ষা করে। একজন স্থানীয় বলেন, “চোখে না দেখলে বিশ্বাস হতো না—ওসি কীভাবে আগুনের মধ্যে ঢুকে বস্তা বের করলেন। তিনি না থাকলে ক্ষতি অনেক বেশি হতো।” পূবাইল থানার সেকেন্ড অফিসার (এসআই) নাজমুল হক, যিনি প্রত্যক্ষদর্শী, বলেন, “ওসি স্যার নিজে মালামাল বের করতে শুরু করতেই সাধারণ মানুষ সাহস পেল। মানুষকে উদ্ধারে উদ্বুদ্ধ করতেই তিনি এই ঝুঁকি নেন।”

টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট দ্রুত পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। একজন ফায়ার কর্মকর্তা বলেন, “আমরা পৌঁছানোর আগেই ওসি ও স্থানীয়রা সক্রিয় ছিলেন। তার উপস্থিতি ও দ্রুত সিদ্ধান্ত ক্ষতি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।” ওসি খালিদ হোসেনের আগুনের মধ্যে বস্তা মাথায় নেয়ার ছবি ও ভিডিও ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়, যা তাকে বিপদের মুখে নিঃস্বার্থ জনসেবার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে এবং ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়ে নেয়। এই ঘটনা প্রথম সাড়া দেয়া কর্মকর্তাদের ঝুঁকির পাশাপাশি দেখায় কীভাবে একজনের বীরত্ব সম্প্রদায়কে বিপর্যয় মোকাবিলায় একত্রিত করতে পারে।