পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের হাঙ্গু জেলার শাহু রোডের কাজি তালাব চেকপোস্টে বুধবার (২৬ নভেম্বর ২০২৫) গভীর রাতে সন্ত্রাসীদের হামলায় অন্তত তিন পুলিশ সদস্য নিহত এবং দুজন আহত হয়েছেন। আক্রমণকারীরা, যাদের তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) বা অনুরূপ গোষ্ঠীর সাথে যুক্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, পাহাড়ি অবস্থান থেকে গুলি চালিয়ে চেকপোস্টে হামলা করে, যা এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা মুখোমুখি সংঘর্ষে রূপ নেয়। জেলা পুলিশ অফিসার (ডিপিও) খান জেব খান নিহত পুলিশদের “অটল সাহসিকতা”র প্রশংসা করে বলেন, অতিরিক্ত বাহিনী দ্রুত পৌঁছে আক্রমণকারীদের খাড়ি করতে সক্ষম হয়েছে, যারা দায়িত্ব দাবি না করে পালিয়ে যায়।

নিহতদের মধ্যে ছিলেন ল্যান্স হেড কনস্টেবল (এলএইচসি) ওহিদ শাহ এবং কনস্টেবল আবদুল সমাদ, তৃতীয় নিহত পুলিশের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হয়নি এবং লাশগুলোকে হাঙ্গুর জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে পোস্টমর্টেমের জন্য। আহতদের একই হাসপাতালে চিকিত্সা দেওয়া হচ্ছে এবং তাদের অবস্থা স্থিতিশীল। এই হামলা ২০২২ সালে সরকারের সাথে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বালুচিস্তানে বাড়তে থাকা সহিংসতার সাম্প্রতিক ঘটনার অংশ, যেখানে নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। আফগান সীমান্তবর্তী হাঙ্গুতে অক্টোবর ২৪-এ রোডসাইড বোম্বায় তিন পুলিশ নিহত হয়েছে এবং নভেম্বর ২-এ আইইডি বিস্ফোরণে আরও কয়েকজন আহত হয়েছে।

খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী সোয়াইল আফরিদি এই “কাপুরুষোচিত এবং নিন্দনীয়” হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম নেই” এবং এটি শান্তিকে বিঘ্নিত করার চেষ্টা, কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর মনোবল ভাঙতে পারবে না। তিনি অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন এবং আহতদের “সেরা চিকিত্সা” নিশ্চিত করেছেন, সাথে প্রাদেশিক পুলিশ প্রধানের কাছ থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছেন। ফেডারেল অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী মোহসিন নকভি নিহতদের “ত্যাগ এবং সাহসিকতা”র প্রশংসা করে বলেন, খাইবার পাখতুনখোয়ার পুলিশ মিলিট্যান্টদের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে, এমন আকস্মিক হামলাগুলো প্রদেশের ছিদ্রযুক্ত সীমান্ত এবং উপজাতীয় গতিবিধির সুযোগ নেয়, এবং টিটিপির পুনরুত্থান রোধে উন্নত গোয়েন্দা এবং সম্প্রদায়-ভিত্তিক অংশগ্রহণের প্রয়োজন, যা এ বছরে দেশজুড়ে ১,০০০-এর বেশি প্রাণহানি ঘটিয়েছে।