বাংলাদেশের নাটোরের নূরে-মদিনা মডেল মাদ্রাসার দুই কিশোর শিক্ষার্থী অসাধারণ নিষ্ঠা ও ঐশ্বরিক অনুগ্রহের মাধ্যমে পবিত্র কুরআন হিফজে অভূতপূর্ব কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। মাদারীপুরের শিবচর অঞ্চলের প্রবাসী বেলাল মোল্লার ছোট ছেলে আট বছরের মো. মারুফ হাসান মাত্র ৭০ দিনে পূর্ণ ৩০ পারা হিফজ সম্পন্ন করেছেন। তার ক্লাসমেট, নাটোর সদরের জাঠিয়ান গ্রামের নয় বছরের আব্দুর রহমানও ১৪০ দিনে সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্থ করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের এ সাফল্যের খবর ভাইরাল হয়ে উঠায় স্থানীয় সমাজে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।

হিফজ শুরু থেকেই উভয় কিশোরই দৌর, সাবক ও মুরাকাবার নির্ধারিত রুটিন কঠোরভাবে পালন করে অসাধারণ গতিতে অগ্রসর হয়েছেন। মাদ্রাসা কর্মকর্তারা জানান, কুরআনের প্রতি তাদের গভীর অনুরাগ এবং নিরলস শৃঙ্খলাই এই দ্রুত অর্জনের মূল চালিকাশক্তি। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুফতি নূরনবী সিরাজী বলেন, “কুরআনের প্রতি গভীর ভালোবাসা, শৃঙ্খলা ও অবিরাম মনোযোগই তাদের এত অল্প সময়ে হিফজ সম্পন্ন করতে সাহায্য করেছে। আল্লাহর বিশেষ রহমত ছাড়া এমন কৃতিত্ব অকল্পনীয়।”

হাফেজ হয়ে উঠে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে মারুফ বলেন, “এটি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। সকলে দোয়া করুন, আমি কুরআনের আলোয় বিশ্বজয়ী হাফেজ হয়ে উঠতে পারি।” আব্দুর রহমান বলেন, “আল্লাহ আমাকে কুরআন বুকে ধারণ করার শক্তি দান করেছেন। শিক্ষক ও অভিভাবকরা প্রতিদিন অনুপ্রাণিত করেছেন—তাদের প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ। জীবনভর কুরআনকে সঙ্গী রাখাই আমার স্বপ্ন।”

পরিবারগুলি এই সাফল্যকে ঐশ্বরিক নেয়ামত হিসেবে গ্রহণ করেছেন। মারুফের মা বলেন, “এত অল্প বয়সে সন্তানের এ কৃতিত্ব আমাদের জন্য আল্লাহর মহান অনুগ্রহ। আমরা চাই, সে ইসলামী জ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে সমাজ ও দেশের কল্যাণে কাজ করুক।” আব্দুর রহমানের পিতা সেন্টু মিয়া বলেন, “সন্তানের এ অর্জন আমাদের পরিবারের গর্বের বিষয় এবং আল্লাহর অসীম রহমত। আমি দোয়া করি, সে সারাজীবন কুরআনের আলোয় পথ চলুক এবং আদর্শ মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক।”