গত ২১ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে নরসিংদীর মাধবদী কেন্দ্র করে আঘাত হানা ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ১০ জন নিহত এবং ৩০০-র বেশি আহত হওয়ার পর ঢাকার ভয়াবহ ভূমিকম্প-ঝুঁকি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা নতুন করে সতর্কবার্তা দিয়েছেন। রাজধানীর অদূরে মধুপুর ফল্টের কারণে ৯ মাত্রা পর্যন্ত ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদরা। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় রাজউকের ২০২৪ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও ঢাকার প্রায় ৮ লাখ ৬৪ হাজার থেকে ১৩ লাখ ৯০ হাজার ভবন (মোট ভবনের ৪০-৬৫ শতাংশ) পুরোপুরি ধসে পড়তে পারে, যাতে দিনের বেলায় ২ লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারাতে পারেন এবং আরও ২ লাখ আহত হতে পারেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপকরা জানান, ভারতীয় ও বার্মিজ প্লেটের সংযোগস্থল সিলেট-চট্টগ্রাম ফল্ট জোন গত ৮০০-১০০০ বছর ধরে ‘লকড’ অবস্থায় রয়েছে; এ কারণে ৮.২ থেকে ৯.০ মাত্রার একটি মহাভূমিকম্প এখন ভূতাত্ত্বিকভাবে ‘অতি-সম্ভাব্য’। নরম পলিমাটি ও ভরাট জলাশয়ের ওপর নির্মিত ৪-৮ তলা মাঝারি উচ্চতার ভবনগুলোই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে, যেগুলোর অধিকাংশই ভূমিকম্প-সহনীয় কোড মানেনি এবং নিয়ন্ত্রণহীন নগরায়ণ ও দুর্নীতির কারণে অনুমোদন পেয়েছে। সিডিএমপি’র হিসাবে, ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ৭২ হাজার ভবন পুরোপুরি ধসে পড়বে এবং ১ লাখ ৫০ হাজার ভবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী সতর্ক করে বলেছেন, শুক্রবারের ভূমিকম্পটি ছিল একটি ‘ফোরশক’; দ্রুত ভবন পরীক্ষা, কোড কার্যকর করা ও জনসচেতনতা না বাড়ালে আসন্ন ‘মহাবিপর্যয়’ রুখে রাখা অসম্ভব হবে।