বঙ্গোপসাগরের মালাক্কা প্রণালী এবং উত্তর-পূর্ব ইন্দোনেশিয়ার উপকূলীয় এলাকায় গঠিত ঘূর্ণিঝড় সেনিয়ার (উচ্চারণ ‘সেন-ইয়ার’) বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫-এর সকালে গভীর নিম্নচাপে দুর্বল হয়েছে বলে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি) এবং ভারতের ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) জানিয়েছে। প্রায় ৩.৭°উ, ৯৯.২°পূ-এ কেন্দ্রীভূত এই সিস্টেম—ইন্দোনেশিয়ার কুটা মাকমুর থেকে ২৮০ কিমি পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্বে, মালয়েশিয়ার জর্জ টাউন থেকে ২৩০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১,৯৩০ কিমি দূরে—পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ১৩ কিমি/ঘণ্টা গতিতে অগ্রসর হচ্ছে, যার একটানা বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৫০ কিমি এবং ঝোড়ো হাওয়ায় ৬০ কিমি পর্যন্ত বাড়ছে, ফলে আশপাশের সাগর উত্তাল।

এর ফলে বিএমডি চট্টগ্রাম (২০৩৫ কিমি দূরে), কক্সবাজার (১৯৭৫ কিমি), মোঙলা (১৯৪৫ কিমি) এবং পায়রা (১৯৩০ কিমি) সহ চারটি প্রধান সমুদ্রবন্দরে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত জারি করেছে, যা জাহাজগুলোকে সম্ভাব্য তীব্রতা বৃদ্ধির জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেয়। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এবং দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় বিক্ষিপ্ত বজ্রপাতসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ২৬ নভেম্বর সকাল ৭:৩০-৮:৩০ ইস্ট-এ ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে অতিক্রম করা এই ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার সকাল পর্যন্ত তীব্রতা বজায় রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে, তারপর বিকেলে আরও দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে এবং পূর্ব দিকে মালয়েশিয়ার দিকে অগ্রসর হবে, যা ভারত বা বাংলাদেশের উপকূলে সরাসরি প্রভাব ফেলবে না। তবে এর অবশিষ্ট আর্দ্রতা অন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ২৭-২৯ নভেম্বর পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি ঘটাতে পারে।

এছাড়া, দক্ষিণ-পূর্ব শ্রীলঙ্কার কাছে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে একটি সুস্পষ্ট নিম্নচাপ এখন নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে—যাকে ‘ডিটওয়াহ’ বলে অভিহিত করা হচ্ছে—এবং ১২ ঘণ্টার মধ্যে গভীর নিম্নচাপে তীব্র হবে বলে পূর্বাভাস, যা উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে তামিলনাড়ু-পুডুচেরি-দক্ষিণ আন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পৌঁছাতে পারে। ৬.৩°উ, ৮২.৪°পূ-এ কেন্দ্রীভূত এই সিস্টেম (শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা থেকে ১৫০ কিমি পূর্ব-উত্তর-পূর্বে) তামিলনাড়ুতে (২৮-৩০ নভেম্বর) বিচ্ছিন্নভাবে অতি ভারী বৃষ্টি এবং উপকূলীয় আন্ধ্রপ্রদেশ ও রায়ালাসিমায় (৩০ নভেম্বর) অনুরূপ বৃষ্টি ঘটাতে পারে, এবং কেরালা ও লাক্ষাদ্বীপে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত বজ্রপাতসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস। প্রভাবিত অঞ্চলের কর্তৃপক্ষগুলো জরুরি ব্যবস্থা চালু করেছে এবং আইএমডি ও বিএমডি এই সক্রিয় ঘূর্ণিঝড় মৌসুমে সতর্কতার আহ্বান জানিয়েছে, যেখানে পরবর্তী মৌসুমের সিস্টেমগুলো অস্বাভাবিকভাবে পূর্ব দিকে বাঁকছে।