ঢাকা–৫ আসনে জামায়াত ইসলামির হয়ে মিজানুর রহমান আজহারীর মনোনয়ন যেকোনো সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সমীকরণে বড় ধরনের আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি দেশ-বিদেশে জনপ্রিয় ইসলামিক বক্তা হিসেবে পরিচিত, ফলে তাঁর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও ব্যাপক আলোচনা তৈরি করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আজহারীর প্রার্থিতা জামায়াতের জন্য এক বড় কৌশলগত পদক্ষেপ, কারণ তাঁর জনপ্রিয়তা সংগঠনের প্রচারযন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করতে পারে। একই সঙ্গে ধর্মভিত্তিক প্রভাব ব্যবহার করে তিনি নির্দিষ্ট ভোটব্যাংকে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারেন, যা প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

এই আসনটি রাজধানীর রাজনীতিতে সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত, কারণ এখানে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের উপস্থিতি এবং বহুমাত্রিক রাজনৈতিক শক্তির প্রতিযোগিতা দেখা যায়। আজহারীর প্রার্থিতা এ আসনের রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বাড়িয়ে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তিও এ ঘোষণাকে ঘিরে নিজেদের কৌশল পুনর্বিবেচনা করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আজহারীর প্রভাব শুধু বক্তৃতায় নয়; তাঁর তরুণ ভোটারদের মাঝে জনপ্রিয়তা ভোটের হিসাবেও প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে এই আসনের নির্বাচনী লড়াই হবে ত্রিমুখী বা বহুমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভরপুর।

তবে তাঁর প্রার্থিতা ঘিরে সমালোচনাও রয়েছে, বিশেষ করে জামায়াতের অতীত রাজনীতি ও বিতর্কিত অবস্থানের কারণে। অনেকেই মনে করেন, জনপ্রিয়তা থাকলেই রাজনৈতিক যোগ্যতা প্রমাণিত হয় না, বরং সংসদীয় গণতন্ত্রে অভিজ্ঞতা, দৃষ্টিভঙ্গি এবং নীতিগত অবস্থানও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া আজহারীর রাজনৈতিক অবস্থান, নীতি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই, যা নির্বাচনী প্রচারণায় বড় আলোচনার জন্ম দিতে পারে। সব মিলিয়ে ঢাকা–৫ আসনে তাঁর লড়াই শুধু একটি রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়; বরং দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক আলোচনার একটি নতুন অধ্যায় হিসেবে সামনে আসছে।