ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠানের সম্ভাবনাকে বিবেচনা করে নির্বাচন প্রক্রিয়ার কার্যকারিতা যাচাইয়ের জন্য নির্বাচন কমিশন রাজধানীতে মক ভোটিং কার্যক্রম শুরু করেছে। এই পরীক্ষামূলক ভোটিং শনিবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে শেরেবাংলা নগরের সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এবং চলবে দুপুর ১২টা পর্যন্ত।

এই মক ভোটিংয়ে নারী-পুরুষ মিলিয়ে মোট ৫০০ জন ভোটার অংশ নিচ্ছেন। এই ভোটারদের মধ্যে রয়েছেন সিনিয়র ভোটার, বস্তিবাসী, শিক্ষার্থী, হিজড়া সম্প্রদায়ের সদস্য, প্রতিবন্ধী ভোটার এবং নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের নিবন্ধিত ভোটার। মক ভোটিংয়ে ভোটারদের জন্য ভোটকেন্দ্রে স্লিপ প্রদান, আঙুলের ছাপ যাচাই এবং গোপন কক্ষে ভোট প্রদানের পুরো প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের জন্য ভিন্ন রঙের ব্যালট ব্যবহার করা হওয়ায় ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তির কোনো সম্ভাবনা নেই।

মক ভোটিংয়ে পাঁচটি ভোটকক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। এই কার্যক্রম পরিচালনায় ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে রয়েছেন এবং তাঁর সঙ্গে দুজন সহকারী রিটার্নিং অফিসার কাজ করছেন। এছাড়াও ছয়জন প্রিজাইডিং অফিসার, দশজন পোলিং অফিসার এবং বিপন্ন ভোটকেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট হিসেবে ২০ জন কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সকাল থেকেই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেন, জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠানের আগে প্রতিটি ধাপের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। এই মক ভোটিংয়ের ফলাফল বিশ্লেষণ করে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি, ভোটকক্ষের বিন্যাস, জনবলের প্রয়োজনীয়তা এবং অন্যান্য প্রক্রিয়াগুলোর উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

মক ভোটিংয়ের পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস) এবং দেশীয় সংস্থা বিবি আছিয়া ফাউন্ডেশন এবং বিয়ান মনি সোসাইটির প্রতিনিধিরা উপস্থিত রয়েছেন।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এই মক ভোটিংয়ের অভিজ্ঞতা থেকে প্রাপ্ত শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং গণভোটের ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়াকে আরও সুষ্ঠু ও কার্যকর করা হবে। এই পরীক্ষামূলক ভোটিংয়ের মাধ্যমে নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন দিক যেমন ভোটারদের প্রবেশ-প্রস্থান, ভোট ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং কর্মকর্তাদের সমন্বয়ের মতো বিষয়গুলোর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। এর ফলে প্রকৃত নির্বাচনের সময় কোনো জটিলতা না থাকা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।